চব্বিশের ভাবনা

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ট্রমা হতেও এখনো সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হতে পারিনি। এখনো চোখ বুজিলেই, অন্ধকার জগতে ভেসে উঠে, প্রথমবারের মতো দেখা বন্দুকের নল হতে গুলি বের হওয়া, হঠাৎ হঠাৎ করে তীব্র আওয়াজে ফেটে উঠা সাউন্ড-গ্রেনেড, গুলির শব্দ, টিয়ার শেল বা কাঁদানে গ্যাস, আর লম্বা লম্বা দা/লাটি ইত্যাদি, আর নিরস্ত্র সাহসী ছাত্রজনতাদের আপন প্রাণ বাঁচানোর একমাত্র সম্বল ইটপাটকেল আর হাতে কিংবা মাথায় জাতীয় পতাকা নিয়ে একে অপরকে দাওয়া-পাল্টা! অবশেষে, এই স্বল্প সময়ে ১৬০০+/- সাধারণ মানুষ, শিশু, নারী সহ শহীদদের বিনিময়ে 'বাংলাদেশ ২.০' এর অভ্যুদয়।
আজ ২০২৫ ইং জানুয়ারির প্রারম্ভে, 'চব্বিশের ভাবনা' নামে ২৪ সালে পঠিত সর্বমোট ৪২টি বই হতে 'টপ টেন' বাছাই করতে গিয়ে সময়ের কথা মনে পড়ল। 'মন পড়ে আছে এখনো সেই করোনাকালীন সময়ে ২০২০ এ, অথচ দেহ চলে এসেছে ২০২৫ এ'। ঠিক তেমনি, ২০২৪ সাল টাও এখনো জুলাই মাসেই পড়ে আছে, অভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া সকল শহীদদের প্রতি এবং পঙ্গুত্ব লাভ করা বীরদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।
স্নাতক সম্পন্ন হওয়ার বছর, সেই সাথে জুলাইয়ের ট্রমা ইত্যাদি নানান কারণে তেমন বেশি নন-একাডেমিক বই পড়ার সুযোগ হয়ে উঠে নি। তবুও বাংলাসাহিত্যের কালজয়ী খ্যাত বেশ কিছু পড়ার সুযোগ হয়ে উঠেছিল।
চলুন, টপ টেন দেখা আসা যাক...(নিজস্ব অভিমত).



০১) 
পথের পাঁচালাী
লেখক: বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
ধরণ: গ্রামীণ উপন্যাস
ব্যাক্তিগত রেটিং 5/5


এ বইটি হয়তো আর কয়েক বছর পর, লাইব্রেরি ছেড়ে জাদুঘরে'ই স্থান নিবে।
'জাদুঘর' বিষয়টি, সাধারণত দূর্লভ, অদ্বিতীয়, বা বর্তমানে অপ্রচলিত বিষয়াবলি রাখার জন্য গড়ে উঠেছে।
মোবাইল বা ইন্টারনেট যুগ আসার আগে, আমার মতো যারা নব্বই দশকের এদিক-ওদিকে গ্রামে জন্ম গ্রহণ এবং বেড়ে উঠেছেন(যেটি এখন টেকনোলজি গ্রাস করে ফেলেছে, অর্থাৎ প্রায়ই দূর্লভ বস্তু হয়ে গেছে), আগামী প্রজন্ম গুলোকে তাঁদের সেই স্মৃতি চারণের জন্য, এই বইটি সবসময়ই অগ্রাধিকার পাবে। অপু-দূর্গার খুনসুটি, আর পরিবারের জীবন ব্যাবস্থার দিকে তাকালেই ইন্টারনেট বিহীন গ্রামের ‍অবস্থা বুঝতে পারা যায়।


০২) 
পরার্থপরতার অর্থনীতি
লেখক: আকবর আলি খান
ধরণ: প্রবন্ধগ্রন্থ
ব্যাক্তিগত রেটিং 5/5


বিবিএ এর শিক্ষার্থী হিসেবে, অর্থনীতি বিষয়ের সাথে বেশ পরিচিত। কিন্তু সবই ছিল Bookish Knowledge/theoretical. আকবর আলি খান স্যার, তাঁর জীবনে অনেক দিন ধরে সরকারি বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘ জীবনের এই অভিজ্ঞতা ও অবজারভেশন কাজে লাগিয়ে হাস্যরসাত্মকভাবে বিভিন্ন ইতাহাস, মনীষী, এবং অর্থনীতিবিদের রেফারেন্স ব্যবহার করে, এই দান/খয়রাতের অর্থাৎ পরার্থপরতার অর্থনীতিকে ভালোভাবে ফুটিয়ে তোলেন।
উদাহরণস্বরূপ: গরীবদের কেন নিকৃষ্ট পণ্য দান করা উচিত, শু*রের বাচ্চাদের অর্থনীতি বলতে গিয়ে দুর্নীতিকে বিশ্লেষণ, মোল্লা নাসিরউদ্দিনের মজার গল্পগুলো নিয়ে বর্তমান বিশ্ব অর্থনীতির সাথে সামঞ্জস্যতা, লিঙ্গ বৈষম্যের অর্থনীতি বুঝাতে গিয়ে বনলতা সেন' কবিতাটির ব্যাখ্যা, বন্যা-নিয়ন্ত্রণে রাজনৈতিক অর্থনীতি ইত্যাদি সব বিষয়ই বিশ্লেষণ করেছেন।
'অর্থনৈতিক মানুষ ও মানুষ হিসেবে অর্থনীতিবিদ', 'অর্থনীতির দর্শনের সন্ধানে', 'মোল্লা নাসিরুদ্দিনের অর্থনীতি' অধ্যায় বেশ ভালোই লাগছে।
একাধারে একজন ইতিহাসবিদ এবং অর্থনীতিবিদ হিসেবে, এ দু'য়ের মধ্যে সামঞ্জস্য রেখে, বিভিন্ন রেফারেন্স সহকারে অর্থীনিতির বিভিন্ন বাস্তবতা তুলে ধরেছেন।
মাস্ট রিড বুক।


০৩) 
একলব্য
লেখক: হরিশংকর জলদাস
ধরণ: উপন্যাস
ব্যাক্তিগত রেটিং 4/5



আহ্
কি এক অসাধারণ উপস্থাপন!
মহাভারতের দুই অবহেলিত(পরাজিত বলে!) বীর চরিত্র একলব্য আর কর্ণকে বিশেষায়িত করে, ধর্ম ও অধর্মের লড়াই অর্থাৎ কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ নিয়ে সংক্ষেপিত লেখা।
অনার্য এবং নিষাদ গোত্রের রাজপুত্র একলব্য অস্ত্রশিক্ষার জন্য, সময়ের শ্রেষ্ট ধনুর্ধর দ্রোণাচার্যের কাছে যান। কিন্তু অনার্য হওয়ায় একলব্যকে ফিরিয়ে দিলে, গুরুভক্তিকে হৃদয়ে ধারণ করে নিজে নিজে অস্ত্র চালনায় শ্রেষ্টত্ব লাভ করেন।
ঘটনাক্রমে, প্রত্যক্ষ গুরু না হয়েও, দ্রোণাচার্য একলব্যের নিকট গুরুদক্ষিণা হিসেবে, একলব্যের অভাবনীয় এক ক্ষতি করে বসেন!
একইভাবে কর্ণও নিচু জাতের হওয়ায় দ্রোণাচার্য অস্ত্রচালনা শিক্ষা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে, উভয়ের মধ্যে যে ক্রোধ, আক্রোশ, বিদ্বেষ বা ঘৃণার উদ্ভব হয়, তাই একলব্য উপন্যাসের প্রধান বিষয়।
মহাভারতের অন্যান্য প্রধান চরিত্র গুলোরও সমন্বয়ে পারিবারিক 'পাণ্ডব ও কৌরবদের' কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ নিয়ে সমাপ্তি ঘটান।
উপন্যাসের প্রতিটা চরিত্রের চারিত্রিক ব্যাখ্যাটা অনবদ্য ছিল।


০৪.১) 
বিষবৃক্ষ
লেখক: বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
ধরণ: সামাজিক উপন্যাস
ব্যাক্তিগত রেটিং 5/5 


"এত দিন যত্নে ধর্ম্মরক্ষা করিয়া, একদিনের সুখের জন্য তাহা নষ্ট করিয়া উৎসৃষ্টার্থ কৃপণের ন্যায় চিরানুশোচনার পথে দন্ডায়মান হইল।"
বিষবৃক্ষ উপন্যাসটি গ্রন্থাকারে প্রথম প্রকাশিত হয় ১৮৭৩ সালে। যখন বাঙালি হিন্দুসমাজে বিধবাবিবাহ এবং বহুবিবাহ প্রথা মূখ্য হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
উপন্যাসের প্রধান চরিত্র বিধবা কুন্দনন্দিনী'র প্রতি সূর্যমুখীর স্বামী নগেন্দ্রের যে প্রেমানুভূতি, তা নিয়ে পরিবারের পরষ্পরের মধ্যে শ্রদ্ধাবোধ রেখে যে সমস্যা সৃষ্টি হয়, তাই বঙ্কিমচন্দ্র(সরল ভাষায়!) অতি চমৎকার শব্দ চয়নের মাধ্যমে উত্থাপন করেন।
কমল এবং তাঁর ছোট বাচ্চা ছেলে সতীশের সাথে কথোপকথনগুলো মন ছুঁয়ে গিয়েছিল, হীরা, দেবেন্দ্র চরিত্রগুলোর কার্যকলাপ ভালোভাবে দেখিয়েছেন। সূর্যমূখীর স্বামী ভক্তি, এবং নগেন্দ্রেরও প্রেমানুভূতি আর অনুতাপের দিকগুলো রোমাঞ্চকর।
খুব সম্প্রতিই রবী ঠাকুরের 'চোখের বালি' পড়েছি। এ উপন্যাসের 'বিনোদিনী, আশালতা, মহেন্দ্র' এদের সাথে বিষবৃক্ষের 'কুন্দনন্দিনী, সূর্যমুখী এবং নগেন্দ্র' তুলনা করা যেতে পারে। এবং গল্পের ভাবটাও প্রায় শতাংশের কাছাকাছি মিল রয়েছে, শুধু ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে এতটুকুই।
বেশ কয়েকদিন ধরে অল্প অল্প করে, এ উপন্যাসটি বেশ আনন্দ নিয়ে শেষ করেছি।


০৪.২) 
চোখের বালি
লেখক: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
ধরণ: সামাজিক উপন্যাস (প্রেম নাকি পরকীয়া?)
ব্যাক্তিগত রেটিং 4/5



হাই বোকা আশালতা,
পড়ালেখা না জানা, সহজ সরল আশা, দুধ কলা দিয়ে যেন কালো সাপ(বিনোদীনিকে) পুষেছিল। বিধবা বিনোদীনির প্রাচুর্য্য, সম্মান, মানসিক বা শারীরিক লোভ কিংবা চাহিদা সবই যেন ছিল, তাঁর চোখের বালি / সখী, আশার স্বামী মহেন্দ্র'র প্রতি!
বিহারি চরিত্রটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্দর একটা জায়গা দখল করেছিল।
রাজলক্ষ্মী, অন্নপূর্ণা, মহেন্দ্র, বিহারি, আশালতা, এবং বিনোদীনি -মাত্র এ ছয়টি চরিত্র নিয়ে, এক মনস্তাত্ত্বিক সামাজিক গল্প ফুটে উঠেছে।


০৫) 
ম্যাকবেথ
লেখক: উইলিয়াম শেকসপিয়ার
অনুবাদক: খুররম হোসাইন
ধরণ: নাটক (ট্র্যাজেডি)
ব্যাক্তিগত রেটিং 4.5/5



ক্ষমতা লিপ্সা এবং রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা কিভাবে একজনকে পশুতে পরিণত করে, তারই এক উদাহরণ, ট্র্যাজেডি ধর্মী এই নাটকটি।
উপন্যাসের মূল চরিত্র রাজা ডানকানের সফল বীর সেনাপতি ম্যাকবেথ, কিভাবে ডাইনি'দের ভবিষ্যৎ বাণী দ্বারা প্রভাবিত হয়ে, এবং স্ত্রী লেডি ম্যাকবেথের প্ররোচনায়, রাজাকে হত্যা করে, রাজ্যের স্বৈরশাসক হয়ে উঠনে এবং তা টিকিয়ে রাখার প্রত্যয়ে একের পর এক নৃশংসতা চালিয়ে যান তা, অনুবাদকের সরল বাচনভঙ্গির মধ্য দিয়ে শেকসপিয়ারের নাটকটি দারুণভাবে ফুটিয়ে তুলেন।


০৬) 
বরফ গলা নদী
লেখক: জহির রায়হান
ধরণ: সামাজিক উপন্যাস
ব্যাক্তিগত রেটিং 4/5


ঢাকার এক জীর্ণশীর্ণ এলাকায়, এক অসচ্ছল পরিবারের বিভিন্ন স্বপ্ন নিয়ে ওঠা-নামার গল্প।
প্রেম, বিরহ, অভিমান, দারিদ্র, স্বপ্ন ইত্যাদি নিয়ে জীবনসংগ্রামকে জহির রায়হান তাঁর সৃষ্ট চরিত্র গুলোর মধ্যে খুব ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলেছে।


০৭) 
The Boy, the Mole, the Fox, and the Horse
Author: Charlie Mackesy
Genre: Literary Graphic Novels
Personal Rating 5/5


This is just a precious diamond and a small gift, especially for those who have a mind. “This is a book for everyone, eighty or eight-”
Some insightful quotes are:
1. "Tears fall for a Reason and they are your strength, not weakness."
2. "What do you think is the biggest waste of time?"
"Comparing yourself to others," said the mole.
3. “What do you think success is?” asked the boy.
“To love,” said the mole.
4. “Being kind to yourself is one of the greatest kindnesses” said the mole.
5. “Often the hardest person to forgive is yourself”
This book teaches us about love, friendship, and the beauty of being true to ourselves.


০৮) 
কাসাসুল আম্বিয়া (তিন খন্ড একত্রে)
সংকলনে: মাওলানা মোঃ আশরাফ উজ্জামান
ধরণ: ইসলামিক বই



কাসাসুল শব্দের অর্থ হলো গল্প বা কাহিনী, আম্বিয়া শব্দের অর্থ হলো নবীগণ।
সুতারাং কাসাসুল আম্বিয়া অর্থ নবীদের গল্প।
বইটিতে মুহাম্মদ (সাঃ) এর সম্পূর্ণ জীবন কাহিনী (জন্ম, নবুয়ত লাভ, মেরাজ, যুদ্ধ, পরলোকগমন, খলীফা নির্বাচন ইত্যাদি) বিস্তারিত তুলে ধরেন।
এরপর ক্রমান্বয়ে আদম (আ) হতে প্রসিদ্ধ নবী-রাসুলদের জীবনী তুলে ধরেন।
বইটির বিশেষত্ব হল 'এটিতে ক্রম অনুসরণ করা হয়েছে'।
সেই হিসেবে প্রসিদ্ধ নবী-রাসুলদের মধ্যে ক্রম অনুসারে তাঁদের জন্ম, ধর্ম প্রচার, আচার-আচরণ, বিচার ব্যাবস্থা ইত্যাদি সব আদম (আ) হতে মুহাম্মদ (সাঃ) এবং পরবর্তীতে ঈসা(আ) এর আগমন ইত্যাদি বিস্তারিত লেখা হয়েছে।
কোন পাঠক বা আগ্রহীগণ আম্বিয়াগণের জীবনী গুলো একসাথে পড়গে চাইলে, এটাই রেকমেন্ডড থাকবে।
পড়ে দেখুন।


০৯)
সুন্দরবনের সাত বৎসর
লেখক: বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
ধরণ: এডভেঞ্চার
ব্যাক্তিগত রেটিং 5/5


আপনারও কি কখনো মনে হয়েছে, শহরের এই বিষাক্ততা এবং কোলাহল ছেড়ে বন-জঙ্গলে গিয়ে টারজানের মতো প্রকৃতির সাথে দিন কাটাতে? যেখানে থাকবে 'জলে কুমির ডাঙ্গায় বাঘ' প্রবাদটির মতো জলে কুমির বা হাঙ্গরের ভয়, আর ডাঙ্গায় বাঘ, ভাল্লুক, অজগর বা বিভিন্ন বিষাক্ত সাপ ইত্যাদির সাথে যুদ্ধ করে, কখনো পূর্ণিমা আবার কখনো অমাবস্যা, অথবা কখনো তীব্র শীত, কখনওবা তীব্র বর্ষা ইত্যাদি বিভিন্নরকমের সুন্দর ও ভয়ংকর রূপী প্রকৃতির সাথে একধরনের যুদ্ধ বা মুগ্ধ হয়ে দিন কাঠাতে। খাবার হিসেবে মাছ, শাকসবজি, ফলমূল কিংবা কখনো কখনো গাছের লতাপাতা গুলোও খেয়ে ফরমালিন মুক্ত থাকতে?
আপনাদের ইচ্ছে হয় কি-না সেটা জানি না, তবে আমার তীব্র ইচ্ছে হয়, এই কংক্রিটের সীমানা পেরিয়ে আফ্রিকা বা আমাজন জঙ্গলের আদিবাসীদের মতো করে প্রকৃতির সাথে থাকতে।
বিভূতিভূষণের চাঁদের পাহাড়, আরণ্যক, সুন্দরবনের সাত বৎসর বইগুলো পড়লে আপনিও নিঃসন্দেহে বলে দেবেন, লেখকেরও তীব্র ইচ্ছে ছিল লেখক না হয়ে এরকম বনবাসী মানুষ হওয়ার!
জলদস্যুরের হাতে পড়ে নীলু, সুন্দরবনে তার কাটানো সাত বৎসরের বর্ণনায় আপনি উপরিউক্ত সবকিছুই খোঁজে পাবেন। প্রতিটি পদে পদে বোধ হয় মৃত্যু ভয়, সৌন্দর্য্য, বিস্ময় ইত্যাদি সবকিছুর সমন্বয়।
নীলুর বর্ণনাটি প্রথম পুরুষের(আমি) হওয়ায় গল্পটি আরও একটু বেশি থ্রিলিং বোধ হয়েছে। বইটি অনেক মনস্তাত্ত্বিক বিষয়েও লেখক আপনাকে প্রভাবিত করবে।
আপনার পছন্দের তালিকায় জঙ্গল এডভেঞ্চার, প্রকৃতি প্রেম, কিংবা থ্রিলার ইত্যাদি থেকে থাকলে, শেষ পর্যন্ত পড়ে ফেলুন।
লেখকের প্রতিটা বিষয়ের এত সুন্দর বর্ণনা, সবসময়ই মুগ্ধ করে রাখে।


১০) 
মধ্যযুগের বাংলা
লেখক: খন্দকার স্বনন শাহরিয়ার
ধরণ: ইতিহাস
ব্যাক্তিগত রেটিং 4/5



স্কুলে থাকাকালীন ইতিহাস ভিত্তিক বই গুলো পড়তে তেমন আগ্রহ পেতাম না, অথচ এ বইটি একনাগাড়ে শেষ করে ফেলেছি!!
লেখক এখানে মধ্যযুগের শাসন(১২০০-১৮০০ইং), বখতিয়ার খলজি হতে সিরাজ-উদ-দৌলা পর্যন্ত, সরল ভাষায় 'রাজ্য দখল ও শাসনামল' উপস্থাপন করেন।
শাসনামলের ধারাবাহিকতা থাকায়, রাজ্যবিস্তারের উদ্দেশ্যে ধর্মপ্রচার, সিংহাসনের জন্য ধর্মান্তর, সিংহাসনের জন্য বাবা, ভাই কিংবা আত্মীয়েদর মধ্যে যুদ্ধ ইত্যাদি অনেক বিষয় ভালোভাবে উপলব্ধি করা যায়।
"সুশাসনের ব্যর্থতা যে জনগনের দুর্ভোগ আর শাসকের স্থায়ী গ্লানী ডেকে আনে, ইতিহাসের এই শিক্ষা থেকেও কেউই কিছু শেখে না।"
"কোন শাসনব্যবস্থাই চিরস্থায়ী নয়। জোর করে কোন শাসনব্যবস্থাকে চিরস্থায়ী করতে গেলে অন্তঃকোন্দল কিংবা বাইরের শত্রুর আক্রমণ কিংবা এই দুটোই সেই শাসনব্যবস্থাকে ধ্বংস করে ফেলে।"

হ্যাপি রিডিং




Reactions

Post a Comment

0 Comments