সুন্দরবনের সাত বৎসর
লেখক: বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ধরন: এডভেঞ্চার
ব্যাক্তিগত রেটিং 5/5 (Favourite)
আপনারও কি কখনো মনে হয়েছে, শহরের এই বিষাক্ততা এবং কোলাহল ছেড়ে বন-জঙ্গলে গিয়ে টারজানের মতো প্রকৃতির সাথে দিন কাটাতে? যেখানে থাকবে 'জলে কুমির ডাঙ্গায় বাঘ' প্রবাদটির মতো জলে কুমির বা হাঙ্গরের ভয়, আর ডাঙ্গায় বাঘ, ভাল্লুক, অজগর বা বিভিন্ন বিষাক্ত সাপ ইত্যাদির সাথে যুদ্ধ করে, কখনো পূর্ণিমা আবার কখনো অমাবস্যা, অথবা কখনো তীব্র শীত, কখনওবা তীব্র বর্ষা ইত্যাদি বিভিন্নরকমের সুন্দর ও ভয়ংকর রূপী প্রকৃতির সাথে একধরনের যুদ্ধ বা মুগ্ধ হয়ে দিন কাঠাতে। খাবার হিসেবে মাছ, শাকসবজি, ফলমূল কিংবা কখনো কখনো গাছের লতাপাতা গুলোও খেয়ে ফরমালিন মুক্ত থাকতে?
আপনাদের ইচ্ছে হয় কি-না সেটা জানি না, তবে আমার তীব্র ইচ্ছে হয়, এই কংক্রিটের সীমানা পেরিয়ে আফ্রিকা বা আমাজন জঙ্গলের আদিবাসীদের মতো করে প্রকৃতির সাথে থাকতে।
বিভূতিভূষণের চাঁদের পাহাড়, আরণ্যক, সুন্দরবনের সাত বৎসর বইগুলো পড়লে আপনিও নিঃসন্দেহে বলে দেবেন, লেখকেরও তীব্র ইচ্ছে ছিল লেখক না হয়ে এরকম বনবাসী মানুষ হওয়ার!
জলদস্যুরের হাতে পড়ে নীলু, সুন্দরবনে তার কাটানো সাত বৎসরের বর্ণনায় আপনি উপরিউক্ত সবকিছুই খোঁজে পাবেন। প্রতিটি পদে পদে বোধ হয় মৃত্যু ভয়, সৌন্দর্য্য, বিস্ময় ইত্যাদি সবকিছুর সমন্বয়।
নীলুর বর্ণনাটি প্রথম পুরুষের(আমি) হওয়ায় গল্পটি আরও একটু বেশি থ্রিলিং বোধ হয়েছে। বইটি অনেক মনস্তাত্ত্বিক বিষয়েও লেখক আপনাকে প্রভাবিত করবে।
আপনার পছন্দের তালিকায় জঙ্গল এডভেঞ্চার, প্রকৃতি প্রেম, কিংবা থ্রিলার ইত্যাদি থেকে থাকলে, শেষ পর্যন্ত পড়ে ফেলুন।
লেখকের প্রতিটা বিষয়ের এত সুন্দর বর্ণনা, সবসময়ই মুগ্ধ করে রাখে।
0 Comments