আমাদের ইসলাম ধর্ম মতে, এই সুন্দর পৃথিবীতে মানুষের একটাই জীবন অর্থাৎ পুনর্জন্মের কোন সুযোগই নেই। কোন ব্যক্তিই বা চাইবে যে, তাঁর ৬০ থেকে ৭০ বছরের ছোট জীবনে দুঃখ-দুর্দশা, অবহেলা এবং পিছিয়ে পড়া ব্যক্তির মতো করে বেঁচে থাকতে!?
আমাদের এই দেশে এখনো—
☞যেখানে বাক-স্বাধীনতা আদায়ের জন্য আন্দোলন করতে হয়
☞মৌলিক অধিকার(খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা) আদায়ের জন্য স্লোগান নিয়ে পথে নামতে হয়
☞যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় হতে আনসিস্টিমেটিক পড়াশোনা করে, প্রতি বছর লাখ লাখ শিক্ষার্থী স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রী নিয়ে বের হয়ে, বেকার অবস্থায় পরিবার, সমাজের বোঝা হয়ে সুইসাইডের পথ বেছে নিতে হয় অর্থাৎ অনিশ্চয়তাই জীবন খাটাতে হয়
☞যেখানে স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও আয় বৈষম্যের কারণে, মানুষের না খেয়ে বেঁচে থাকতে হয়। শহুরে রাস্তাগুলোতে যেখানে ঘন্টার পর ঘন্টা ট্রাফিক জ্যামে বসে থাকতে হয়
☞যেখানে সম্পদের সুষম বন্টন, দেশের অর্থনৈতিক সু-কাঠামো নিশ্চায়ন, শিক্ষা ব্যাবস্থা, চিকিৎসা, বিদ্যুৎ-গ্যাস ইত্যাদির সঠিক সরবরাহে, দেশ বা সরকার ব্যর্থ, সেখানে ‘আমার দেশকে ভালোবাসার কিংবা দেশকে ভালোবাসি বলে গলা ফাটানো’ বিশেষত আমার কাছে মাঝে মধ্যে ওভার্ রেটেড মনে হয়।
‘দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাব,
ভুল দেশে জন্মগ্রহণ করেছি, কিংবা
ভুল সময় জন্ম নিয়েছি..’
এসব আমার নিত্যদিনের কথা ছিল। তবে, বিভিন্ন কারণে পালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়ে ওঠেনি। যার মধ্যে অন্যতম ছিল ইমোশন অর্থাৎ আবেগ।
আজ ৫ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪। গত জুলাই মাসে, আমার উপর্যুক্ত ধারণাটা পাল্টে যায়। অধিকার আন্দোলন এবং দেশ সংস্কারের উদ্দেশ্যে প্রায় ৮০০+*** ছাত্র-ছাত্রী এবং সাধারণ জনগণের রক্ত ও প্রাণের বিনিময়ে ৫ই আগস্ট, স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে নতুন স্বপ্ন দেখা শুরু করেছি।
তবে, এক স্বৈরাচারের পতন হলেও দেশের অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতা প্রদর্শন ও ক্ষমতা পাওয়ার লোভে খুন, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, লুটতরাজ, ভিত্তি স্থাপন ইত্যাদি ইতোমধ্যে শুরু করে দিয়েছে, যা বোধ হয়, স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের আরেক রূপ।
এখন বলুন, এসব জেনেও দেখেও আমি কিংবা আপনার কেন এই দেশকে ভালোবাসা উচিত? যেখানে ইউরোপ-আমেরিকা বা বিশ্বের উন্নত দেশে চলে গেলে কিংবা যদি জন্ম হতো অথবা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের যদি জন্ম হয়; অন্ততপক্ষে উপর্যুক্ত মৌলিক অধিকার, বিশেষত শিক্ষা ও চিকিৎসা, এর জন্য আন্দোলন করতে হতো না বা হবে না।
অন্তত, রাস্তাঘাটের নোংরা দুর্গন্ধ বা দূষণ, জ্যাম, বিদ্যুৎ-গ্যাস সরবরাহ ইত্যাদি হলেও দেখতে হতো না। অথবা বাক-স্বাধীনতা হলেও নিশ্চিত থাকত, যেখানে প্রাণ খুলে প্রাণের রাগ, বিদ্বেষ, ভালবাসা প্রকাশ করা যাবে।
তাহলে, আমি এ দেশে এখনো বসে আছি কেন? কিংবা যাঁরা উন্নত দেশে গিয়েছিল, তাঁরা কিসের টানে আবার, এ ভঙ্গুর দেশে ফেরত আসে? যৌক্তিক উত্তর দিতে পারবেন?
আমার মনে হয় না, কয়েকটা যুক্তি জোর করে দাঁড় করালেও খুব বেশি গ্রহণযোগ্যতা পাওয়া যাবে।
কেননা, দেশপ্রেম জিনিসটা হলো: সন্তান এবং মায়েদের মধ্যে যে সম্পর্ক বিদ্যমান, ঠিক সেইরকমই। এখানে কোন যুক্তি খাটে না, মানতেও চাই না, এবং যুক্তি খাটবেও না।
এখন বলুন, এসব জেনেও দেখেও আমি কিংবা আপনার কেন এই দেশকে ভালোবাসা উচিত? যেখানে ইউরোপ-আমেরিকা বা বিশ্বের উন্নত দেশে চলে গেলে কিংবা যদি জন্ম হতো অথবা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের যদি জন্ম হয়; অন্ততপক্ষে উপর্যুক্ত মৌলিক অধিকার, বিশেষত শিক্ষা ও চিকিৎসা, এর জন্য আন্দোলন করতে হতো না বা হবে না।
অন্তত, রাস্তাঘাটের নোংরা দুর্গন্ধ বা দূষণ, জ্যাম, বিদ্যুৎ-গ্যাস সরবরাহ ইত্যাদি হলেও দেখতে হতো না। অথবা বাক-স্বাধীনতা হলেও নিশ্চিত থাকত, যেখানে প্রাণ খুলে প্রাণের রাগ, বিদ্বেষ, ভালবাসা প্রকাশ করা যাবে।
তাহলে, আমি এ দেশে এখনো বসে আছি কেন? কিংবা যাঁরা উন্নত দেশে গিয়েছিল, তাঁরা কিসের টানে আবার, এ ভঙ্গুর দেশে ফেরত আসে? যৌক্তিক উত্তর দিতে পারবেন?
আমার মনে হয় না, কয়েকটা যুক্তি জোর করে দাঁড় করালেও খুব বেশি গ্রহণযোগ্যতা পাওয়া যাবে।
কেননা, দেশপ্রেম জিনিসটা হলো: সন্তান এবং মায়েদের মধ্যে যে সম্পর্ক বিদ্যমান, ঠিক সেইরকমই। এখানে কোন যুক্তি খাটে না, মানতেও চাই না, এবং যুক্তি খাটবেও না।
আচ্ছা, মাকে কেন ভালোবাসেন?
~সকল মা'কে না, আমার মা'কেই সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি। অর্থাৎ, মি.X সে তাঁর মা'কেই বেশি ভালোবাসেন, আমার মা'কে না। কিন্তু কেন ভালোবাসেন জানে না বা জানি না।
সুতরাং আপনি কিংবা আপনারা, আমাকে 'দেশপ্রেম' নিয়ে প্রশ্ন করবেন না। কেননা,আশানুরূপ উত্তর পাবেন না। যেহেতু, এটা একটা ইমোশন বা আবেগ। এখানে যুক্তি মানে না।
ঠিক একইভাবে, আমার দেশের, জাতীয় সংগীত 'আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি..' এটি আমার কাছে এক রকমের ইমোশন। স্কুলে থাকাকালীন অ্যাসেম্বলিতে পাঠের সময় ফাঁকি দিলেও,এখন শুনলেই গায়ের লোম খাড়া হয়ে যায় কিন্তু কেন জানি না। হয়তো, এটাকেই ইমোশন বলা হয়ে থাকে।
সুতরাং আমার এই ইমোশন পরিবর্তন বা এই বিষয়ে আমার সাথে আলোচনা করবেন না।
পুনশ্চঃ০১> রবীন্দ্রনাথ বিষয়ে যে সব অভিযোগ তোলা হচ্ছে,যদিও আমার কাছে হাস্যকর শোনায়, সেই কারণেই যদি হয়ে থাকে, তাহলে রবীন্দ্রনাথের রচিত জাতীয় সংগীতের পাশাপাশি তাঁর কবিতা, প্রবন্ধ, গান, উপন্যাস ইত্যাদির সব বই নিষিদ্ধ করা হোক, এই দেশে।
এটাই আমার দাবী।
পুনশ্চঃ০২> দেশের পরিবর্তন আসবেই, ইনশাল্লাহ। বাক-স্বাধীনতা আন্দোলনের জন্যই আন্দোলন করেছি। এখন বাক-স্বাধীনতা আছে আপনার। সুতারং, আপনার হৃদয়ের কথা শুনুন, আপনার মনের কথা শুনুন, এরপর বলুন। একটা বই/সাইট পড়ে কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখা পড়ে, অথবা কোন ব্যক্তিবর্গের কথা শুনে, তাঁদের দ্বারা প্ররোচিত হয়ে, আপনার বিশ্বাসটুকু অর্থাৎ ঈমানকে তুচ্ছ করে দিয়েন না অর্থাৎ সাথে সাথেই বিশ্বাস বা অবিশ্বাস করিয়েন না। আপনার মন যেটা বলে, সেটাই করুন, সেটাকেই প্রাধান্য দিন। সবকিছুরই সঠিক সময় আসবে ইনশাল্লাহ।
৫ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪।
0 Comments