নির্বাক পাখি

হে কবি,
    শক্ত করে ধরো,
    তোমার অস্ত্র।
আবারো,
    তোমার অস্ত্রের মধ্য দিয়ে,
    রক্তে রঞ্জিত করে দাও,
    এই শুভ্র ময়দান।

হে কবি,
    শক্ত করে ধরো,
    তোমার অস্ত্র।
যেভাবে,
    কবি নজরুল ধরেছিল,
    ইংরেজদের বিরুদ্ধে।
যেভাবে,
    কবি সুকান্ত চেয়েছিল,
    বাংলার বুকে আঠারোকে নামিয়ে আনতে।
যেভাবে,
    ১৯৫২ তে, মাহবুব আলম চৌধুরী
    হুংকার দিয়েছিল,
    “কাঁদতে আসিনি, ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি” বলে।
যেভাবে,
    ক্ষুদার্থ রফিক আজাদ বলেছিল,
    “ভাত দে হারামজাদা, নইলে মানচিত্র খাব”।

            ধর্ষণ, খুন, আত্নহত্যা
            ঘুষ, চাকরি, বেকারত্ব
    আখিঁ খুলতেই, পত্রিকায় এই
    অক্ষরগুলো দেখতে দেখতে
    মানুষ হারিয়ে ফেলছে, তাঁর মনুষত্ব।

   এদেশে আবারো নেমে এসেছে,
    সেই ভয়াবহ দুর্দিন।
১৭৮২’র মতো,
    “জাগো বাহে কোনঠে সবাই”,
    এই বলে, আরেকটিবার ডাক দিন।

হে কবি,
    শক্ত করে ধরো,
    তোমার সেই ধারাঁলো অস্ত্র..
  এই দিন-দুপুরে চাই না আর,
আমার বোনের ধর্ষিতা হওয়ার কান্না।
আমি এই দিন-দুপুরে চাই না আর,
হঠাৎ গুম হয়ে যাওয়া
সেই ছেলে হারানোর শোকে মায়ের কান্না।

হে কবি,
    আবার অস্ত্র ধরো,
যেভাবে,
    ‘কপোতাক্ষ নদ‘ তাঁর কলকল ধ্বনির মধ্য দিয়ে,
    মধুসূধনকে বিলেত হতে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছিল।
যেভাবে,
    জীবনানন্দ তাঁর কবিতার মাঝেই,
    জীববৈচিত্রের খেলা দেখিয়েছিল।
যেভাবে,
    রবী ঠাকুর ধানের একটি শিশির বিন্দুর উপর,
    পৃথিবীর সমস্ত সৌন্দর্য খোঁজে পেয়েছিল।

এ দেশে কবিদের আজ বড্ড অভাব,
তাই তো প্রতিনিয়তই হোঁচট খাচ্ছি।

আমি এখনো প্রতীক্ষায় আছি,
    ‘পদাঘাতে পাথর ভাঙ্গা’ সেই সুকান্তের।
এখনো প্রতীক্ষায় আছি,
‘জীববৈচিত্রের সাথে প্রেম করা’ সেই জীবনানন্দের।

আমার বিশ্বাস আছে,
কবি তাঁর ধাঁরালো অস্ত্র দিয়ে,
সত্যের প্রতি অনড় থেকে,
এই দেশে মনুষ্যত্বকে আবারো ফিরিয়ে আনবে।।
Reactions

Post a Comment

0 Comments